ই-কমার্স সাইটে কি Google Analytics প্রয়োজন? কেন এটি জানা থাকা উচিত এবং কিভাবে ব্যবসায় সাহায্য করে?

বর্তমান সময়ে ই-কমার্স ব্যবসা মানেই ডাটা-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত।
কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে কতজন আসছে, কোথা থেকে আসছে, কী দেখছে, কোন প্রোডাক্ট বেশি জনপ্রিয়, কোথায় গ্রাহক হারাচ্ছেন—এই তথ্যগুলো যদি না জানেন, তাহলে অন্ধকারে দৌড়ানোর মতো হবে।

এখানেই Google Analytics (গুগল অ্যানালিটিক্স) আপনার ব্যবসার সহায়ক হতে পারে।

এই ব্লগে জানবেন:

  • ই-কমার্স সাইটে কি Google Analytics লাগে?
  • Google Analytics আসলে কেন লাগে?
  • এর কাজ কী?
  • মেইনটেইন করা কি জটিল?
  • উদ্যোক্তাদের কেন এটি জানা থাকা উচিত?
  • কিভাবে ব্যবসায় সাহায্য করতে পারে?
  • মানুষ গুগলে কী কী জানতে চায় তার উত্তর।

ই-কমার্স সাইটে কি Google Analytics লাগে?

হ্যাঁ, প্রত্যেকটি ই-কমার্স সাইটে Google Analytics থাকা প্রয়োজন।
আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর এলেও, সঠিক অ্যানালিটিক্স ছাড়া আপনি বুঝতে পারবেন না:

  • ভিজিটররা আসছে কীভাবে (ফেসবুক, গুগল, রেফারেন্স)
  • কোন পণ্য বা পেইজ বেশি দেখা হচ্ছে
  • কতজন কার্ট পর্যন্ত গিয়েছে কিন্তু অর্ডার করেনি
  • কতজন অর্ডার কমপ্লিট করেছে

এই ইনসাইট ছাড়া আপনি মার্কেটিং বা বিজনেস গ্রোথের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।

Google Analytics আসলে কেন লাগে?

Google Analytics হলো একটি ফ্রি টুল, যা আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটরদের কার্যক্রম ট্র্যাক করে এবং ডাটা আকারে রিপোর্ট করে।

এর মাধ্যমে জানতে পারবেন:

  • ভিজিটরের সোর্স (ফেসবুক, গুগল, ইমেইল, রেফারেল)
  • কোন ডিভাইস থেকে আসছে (মোবাইল, ডেস্কটপ)
  • কোন পেইজে কত সময় থাকছে
  • কোন পেইজ থেকে বেশি মানুষ বের হয়ে যাচ্ছে
  • কোন প্রোডাক্ট বেশি জনপ্রিয়
  • সেলস কনভার্সন রেট কত

Google Analytics এর কাজ কী?

Google Analytics এর প্রধান কাজগুলো হলো:

  • ওয়েবসাইট ট্রাফিক মনিটর করা
  • ইউজারের বিহেভিয়ার বোঝা
  • কোন মার্কেটিং চ্যানেল কতটা কার্যকর তা জানা
  • কনভার্সন রেট ট্র্যাক করা
  • বাউন্স রেট (দর্শক ঢুকে দ্রুত বের হয়ে যাচ্ছে কিনা) জানা
  • অডিয়েন্সের অবস্থান, বয়স, আগ্রহ জানা
  • নতুন ও রিটার্নিং ভিজিটরদের পার্থক্য বুঝা
  • ই-কমার্স ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে রেভিনিউ রিপোর্ট দেখা

Google Analytics মেইনটেইন করা কি জটিল?

অনেক উদ্যোক্তা মনে করেন এটি জটিল। কিন্তু বাস্তবে:

  • সাইটে একবার কোড বসিয়ে দিলে অটোমেটিক ডাটা ট্র্যাক হয়।
  • ই-কমার্স ট্র্যাকিং সেটআপ করতে কিছু কনফিগারেশন করতে হয়, যা একবার করলে বারবার করা লাগে না।
  • আপনি চাইলে Google Tag Manager ব্যবহার করে সহজে মেইনটেইন করতে পারেন।
  • দৈনিক রিপোর্ট না দেখলেও, সাপ্তাহিক/মাসিক রিপোর্ট দেখলেই গ্রোথ চিহ্নিত করা সম্ভব।

অতএব, প্রথমবার সঠিকভাবে সেটআপ করালে মেইনটেইন করা কঠিন নয়।

উদ্যোক্তাদের কেন Google Analytics সম্পর্কে জানা থাকা উচিত?

  • ডাটা ছাড়া ব্যবসার সিদ্ধান্ত নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
  • কোন প্রোডাক্ট জনপ্রিয়, কোন অফার কাজ করছে, কোন সোর্সে মার্কেটিং করলে বিক্রি বেশি হচ্ছে—এসব জানা থাকলে সময় ও খরচ বাঁচিয়ে টার্গেটেড মার্কেটিং করা যায়।
  • গ্রাহকের আচরণ বোঝা গেলে ওয়েবসাইট ও প্রোডাক্ট পেইজ অপটিমাইজ করা যায়।
  • কনভার্সন ফানেল সেট করে কোথায় বেশি গ্রাহক হারাচ্ছেন তা বের করা সম্ভব।
  • অ্যানালিটিক্স শিখলে নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি ছাড়াই নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

কিভাবে Google Analytics ব্যবসায় সাহায্য করতে পারে?

  • প্রমোশন বা অফারের ফলাফল ট্র্যাক করা যাবে।
  • কোন সোর্স থেকে সেলস বেশি হচ্ছে তা বের করে সেখানে বাজেট বাড়ানো যাবে।
  • ওয়েবসাইটের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স অপটিমাইজ করা যাবে।
  • সঠিক সময়ে সঠিক অফার দেওয়া যাবে।
  • রিটার্নিং কাস্টমারদের সাথে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া যাবে।
  • মার্কেটিং খরচ বাঁচিয়ে সেলস বৃদ্ধি করা যাবে।
  • মাসিক গ্রোথ রিপোর্ট তৈরি করে বিজনেস গ্রোথ মনিটর করা যাবে।

Google Analytics ছাড়া ই-কমার্স সাইট মানে চোখ বেঁধে ব্যবসা করা।
যত তাড়াতাড়ি Google Analytics শিখবেন এবং সঠিকভাবে সেটআপ করবেন, তত দ্রুত আপনার ব্যবসার গ্রোথ হবে।

এটি শুধু ভিজিটর সংখ্যা দেখানোর টুল নয়, বরং গ্রাহক বুঝে তাদের জন্য প্রোডাক্ট এবং মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

আপনার ই-কমার্স ব্যবসায় সফলতা আনতে Google Analytics এখনই ব্যবহার শুরু করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top